মেঘের রাজ্য সাজেকে দুইদিন

অনেকদিন থেকে সাজেক যাব যাব করে যাওয়া হচিছল না। অনেকে সাজেক ঘুরে এসে বেশ ভাব নিয়ে কথা বলছে। মেজাজ গরম। শালিকাকে বললাম, খোঁজ খবর নিতে, নিজেও ফেইসবুকের বিভিন্ন পেইজ ঘাটাঘাটি করে তথ্য সংগ্রহ করলাম। হাজারো প্যাকেজ। কাপল,ফ্যামিলি, গ্রুপ প্যাকেজ সাথে প্রতিবেলার খাবারের মেনু। কটেজের মনোলোভা ছবি।  বারান্দায় মেঘসহ নারীর ছবি। দুইহাত দু’দিকে প্রসারিত। মেঘ আর মেঘ। অনেক নীচে সবুজ পাহাড়ের সারি। ছবি দেখেই মনের ভিতর কেমন যেন উদাস বাতাস বয়ে যায়। যেতেই হবে পাহাড়ে-এবার সাজেক (  আরেক নাম রাঙামাটির ছাদ) ।

সাজেক

সাজেক-সুমুই রিসোর্ট ( রুইলূই পাড়া ) থেকে-সকাল ৬ টা ৩-১০-২২

  শ্যালিকা রাহাকে দায়িত্ব দিলাম হোটেল বুকিং-এর আর অভি (ভাইরা) দায়িত্ব দিলাম বাসের টিকিট         (ঢাকা-খাগড়াছড়ি-ঢাকা) বুকিং-এর।পারিবারিক মিটিং-এ ঠিক হলো খাগড়াছড়ি বাস-স্ট্যান্ড থেকে সাজেকের জীপ ভাড়া করা হবে শুধুমাত্র আমাদের জন্য।অন্য কোন গ্রুপের সাথে শেয়ার করার প্রয়োজন নেই। জীপ ভাড়া নির্ধারণ করাই থাকে।আমরা যেহেতু দুই দিন থাকবো, তাই জীপ ভাড়া পড়বে (সাজেক-খাগড়াছড়ি-সাজেক) ১৩,৫০০ টাকা।জীপ ভাড়ার তালিকা কাউন্টারে ঝুলানো থাকে। দর কষাকষির কোন উপায় নেই।এরমধ্যে রাহা ফোনে ফোনে রিসোট বুকিং করে ফেলেছে(৫০% অগ্রিম দিতে হয় বিকাশে)। ১ম দিন রুইলূই পাড়ায়  সু-মুই  ইকো রিসোর্ট(মোবা:01868-316783)। ২য় দিন  কংলাক পাড়ায় বাঁশবাড়ি ইয়ার্ড রিসোর্ট-তিন বেলা খাবার সহ ( মোবা: 01585-481214)।
 
 সাজেক ভ্যালি বিষয়ে কিছু তথ্য  এখানে দিলাম, যাতে ভ্রমণকারীদের নলেজ একটু বাড়ে। আমরা অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করি, কিন্তুু সে জায়গার বিভিন্ন তথ্যাবলী  যেমন ইতিহাস, সংস্কৃতি  ইত্যাদি  আমাদের অগোচরে রয়ে যায়। ভ্রমণ হোক আনন্দের সাথে,তবে যে এলাকায় ভ্রমন করি না কেন সে এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা, ইতিহাস,সংস্কৃতি বিষয়ে একটু জানার চেষ্টা করি। 
 
সাজেক ভ্যালী  রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের একটি বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র।  সাজেক ইউনিয়ন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন। আয়তন ৭০২ বর্গমাইল। সাজেক উপত্যকা রাঙামাটি জেলার সর্বউত্তরে ভারতের মিজোরাম সীমান্তে অবস্থিত। সাজেকের উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য। দক্ষিণে রাঙামাটির লং-দু। পূর্বদিকে ভারতের মিজোরাম এবং পশ্চিমে খাগড়াছড়ির দিঘীনালা উপজেলা অবস্থিত।

যাত্র হলো শুরু : ০২ /১০/২২- খাগড়াছড়ি বাসস্ট্যান্ড : সকালে বাস থেকে নেমে পড়লাম। জেলা শহর। টুরিষ্টরা আনাগোনা করছে। বাস কাউন্টারের পাশে খাবারের অনেকগুলো হোটেল।কেবল হোটেল খুলেছে। নাস্তা তৈরী করতে আধা-ঘন্টা মতো লাগবে। হোটেলের সামনে দাড়িয়ে আছি। সামনে সারি সারি জীপ, চাঁন্দের গাড়ি। আমদের দেখে হাল্কা-পাতলা  এক উপজাতীয় যুবক এগিয়ে এলো। নাম পরাণ চাকমা। সামনে পার্ক করা সাদা জীপের ড্রাইভার। অমায়িক ব্যবহার। আমাকে জানালো সাজেকের দুই দিনের টিকেট কিনতে হবে(আপ-ডাউন-১৩,৫০০ টাকা)। টিকেট নিতে হবে কাউন্টার থেকে। কাউন্টারে বিশাল সিরিয়াল।পরান (ড্রাইভার) সিরিয়িালে দাড়ালে আমি ফিরে আসলাম হোটেলে। সহযাত্রীরা নাস্তা পর্ব শুরু করেছে । পরোটা-ডিম-চা দিয়ে জম্পেশ নাস্তা সারলাম। চিপ্স,পানি আর বিস্কিট কিনলাম ।

আর্মি চেকপোষ্ট,বাঘাইছড়ি,খাগড়াছড়ি
কিছুক্ষণ পর পরাণ আমাকে কাউন্টারে নিয়ে গেলো। নগদ ১৩,৫০০ টাকা দিয়ে টিকেট সংগ্রহ করলাম। সবাই উঠে পড়লাম সাদা জীপে। ছাদ খোলা জীপ। আরামদায়ক গদির চেয়ার। এক পাশে ট্রিপল ভাঁজ করে রাখা। এখানে যখন তখন বৃষ্টি পড়ে। এমনিতে সকাল থেকে আকাশ মেঘলা। আকাশে কালো মেঘের ভেলা। জীপ এগিয়ে চললো খাগড়াছড়ি শহর ছাড়িয়ে।
সাজেক যাওয়ার রাস্তা

0 Response to "মেঘের রাজ্য সাজেকে দুইদিন "

Post a Comment